বউয়ের ভালোবাসা।

-শুক্রবার দিন মটকা মেরে শুয়ে আছি আজ অফিস নেই হুররে।চোখ খুলে দেখি বউ ঘর ঝাড়ু দিচ্ছে।
-শুভ্রা মোবাইলটা দাওতো চার্জ থেকে খুলে।বউ আমার আলহামদুলিল্লাহ আমার কথার উপর কখনো কথা বলেনা।এক কথায় আমি যেটা বলি সেটাই।
-শুভ্রা মোবাইল দিয়ে চলে গেলো রান্না ঘরে।আমি লেপের নিচে মুখ গুজে নিউজফিড স্ক্রল করছি।

-অনেকক্ষন থেকেই দেখছি আমার এক্স হিয়া অনলাইনে।নামের পাশে সবুজ বাতিটা জ্বলছে।সেও নক দিচ্ছেনা আমিও না।কি দরকার মানুষটা আমাকে ছাড়া ভালো আছে আর আমিও শুভ্রাকে নিয়ে বেশ ভালো আছি।
-মূহুর্তে দু,মিনিট নষ্টালজিক হয়ে গেলাম।
-হঠাৎ শুভ্রার ডাক কানে এলো শুভ্রদীপ উঠো নাস্তা রেডি সোনা।
-আমি চোখের কোণে লেগে থাকা জলটা মুছে বললাম,হ্যা উঠছি।
-উঠে দেখি শুভ্রা ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে রেখে গেছে।মনে মনে ভাবছি অনেক ভাগ্য নিয়ে জন্মালেই কেবল শুভ্রার মতো কাউকে বউ হিসেবে পাওয়া যায়।

-ফ্রেশ হয়ে আসলাম শুভ্রা আমার চোখ মুখ দেখে বলল,কি হয়েছে?
-কই কিছুনাতো।
-দেখো শুভ্রদীপ আমি তোমাকে বুঝতে পারি।নিশ্চয়ই ঐ হিয়াটার কথা মনে পরেছে আজ।
-আমি অবাক হয়ে বউয়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম।আর দেড়ি করলাম না উঠে শুভ্রাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম তুমি আমাকে এত ভালো কেন বাসো বলবে?
-ধূরো বোকা কই আর ভালোবাসি,ভালোবাসলে কি অন্য কারো কথা ভেবে তোমার চোখে জল আসতো।
-আমি নিচু হয়ে বললাম হয়েছে বাদ দাও।আসো দুজন নাস্তা করি।
-প্রতিদিনকার মতো আজো আমাকে শুভ্রা নিজ হাতে খায়িয়ে দিলো।

-খাওয়া শেষে হেসে বলে উঠলো আজ ঘুরতে যাবো আমরা।আমিও না করিনি।ও বাসার কাজ গুছিয়ে বিকেলে আমার দেয়া লাল শাড়ীটা পরেছে।কপালে কালো টিপ মুঠোভরা চুড়ি।
-আমি অবাক পানে তাকিয়ে আছি শুভ্রার দিকে এ যেন কোন মত্তলোকের পরী।
-দুজনে রিক্সাচেপে বের হলাম শহরের গলি পেড়িয়ে।
-আমি অবাক হলাম রিক্সাটা থামলো ঘরোয়া রেষ্টুরেন্ট এর সামনে।জানতে চাইলাম এখানে কেনো?
-আরে চলোনা।
-ভেতরে গিয়ে বসলাম শুভ্রা কি যেন অর্ডার করে আসলো।
-দুজন গল্প করছি একমনে বসে।
-একটু পর দেখলাম ওয়েটার গ্রিল আর নান নিয়ে আসলো যেটা আমার সবচেয়ে প্রিয় খাবার।
-আচ্ছা শুভ্রা এইটা কি হলো শুধু শুধু টাকা খরচ।
-ধূরো বোকা আমার শুভ্রদীপের পছন্দ বলে কথা।মনে মনে ভাবছি আমার পকেটে অত টাকাও নাই অথচ বিল কত আসে কি জানি।
-দুজন খাওয়া শেষে বিল পে করতে গিয়ে দেখি অলরেডি বিল দেয়া হয়ে গেছে।

-আমরা বাসার পানে,শহরের মৃদু আলোর ল্যামপোষ্টের নিচে রিক্সায় বসে শুভ্রা আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আছে।আর আমি ভাবছি শুভ্রা বিল দিলো টাকা কোথা থেকে পেলো?
-কিছুক্ষন পর আমরা বাসায় ফিরলাম শুভ্রা ড্রেস পাল্টে আমার কাছে জানতে চাইলো রাতে কি রান্না করবো বলো?
-রান্না পরে আগে বলো টাকা কোথা থেকে পেলে?
-শুভ্রদীপ তুমি আমার হাত খরচের জন্য যে টাকাটা দিতে ওখান থেকেই জমিয়েছি অল্প অল্প করে।
-মূহুর্তেই মনে হলো কত ভাগ্যবান পুরুষ আমি।ঝাঁপটে ধরে বললাম আজ রাতে আর রান্না করতে হবেনা।সারা রাত আমি শুভ্রাবিলাস করবো।
-পাগল একটা।
-হ্যা তবে শুধু তোমার পাগল।

-মোরালিটি___ জীবনে এক্স আছে থাকবে,থাকুক।যাকে পেয়েছেন তাকে তার প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দিন।প্রাক্তন সেতো জীবনের এক অমিমাংসিত রহস্য।যাকে পেয়েছেন তাকে নিয়েই ভালো থাকতে হবে,ভালোবাসাময় করতে হবে প্রতিটা সময়।তবেইনা জীবন আলোয় ভরবে।

 
বউয়ের ভালোবাসা। বউয়ের ভালোবাসা। Reviewed by NINDOOK LIFE on December 13, 2019 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.