ঘুড়ি

ঘুড়ি

সুবিশাল মুক্ত নীলাকাশে।
প্রবল বাতাসে ভর করে,
ডানা না থাকা সত্ত্বেও
ঘুড়ি হয়ে বেশ তো উড়ছিলে।

তবে, সূতোর টানে আরও উপরে
বেশি দূর যেতে পারছিলে না।
লাটাইটা যে আমার হাতে ছিলো।

হারাতে চাইনি তোমায় কিছুতেই।
যদি বৈরী দমকা হাওয়া
আমার থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নেয়?
কিংবা বৃষ্টির ফোঁটায়
তোমার শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়?
সেই ভয়ে তোমাকে গুটিয়ে নিতাম বারংবার।

তাই, বড্ড অভিমান হলো তোমার।
তুমি মনে মনে ভাবছিলে,
অনুকূল পরিবেশ আর
অনেক উপরে উড়ার যোগ্যতা থাকার পরেও
শুধু আমি তোমায় সূতোর টানে
আটকে রেখেছি, তাই না?
কি বোকা তুমি!

অনেক উপরে উড়ার প্রবল ইচ্ছা
তোমাকে দিন দিন আরও আগ্রাসী করে তুললো।
বিদ্রোহিণীর মতো একদিন
ছিন্ন করে দিলে সূতোর বন্ধন।
এক ঝটকায় দমকা বাতাসে অনেক উপরে উঠে যেতে দেখলাম তোমাকে।

স্বাধীনতার আনন্দে তোমার চোখে
বিদ্রূপাত্মক হাসি সুস্পষ্ট।
তারপর নিমিষেই বাকাট্টা।
আর আমি বিস্ফারিত অবাক চোখে
তোমার অবশ্যম্ভাবী পতন দেখতে দেখতে
লাটাইয়ের সূতো গুটিয়ে নিতে ব্যস্ত।

তুমি যে সূতাটা তোমার উন্নতির
অন্তরায় ভেবেছিলে।
আসলে, সেটাই ছিলো আমাদের
আন্তরিক ভালোবাসার বন্ধন।

তুমি যে ভালোবাসার বন্ধনটাকে
আরও সুউচ্চে উড়ার
একমাত্র প্রতিবন্ধক ভেবেছিলে।
আসলে, সেটাই ছিলো তোমার
সুনির্দিষ্ট উচ্চতায় উড়ার
একমাত্র চালিকা শক্তি,
নিরাপত্তার বলয়।

মিথ্যে সুখের আশায়...
যেই মুহূর্তে তুমি বন্ধন ছিন্ন করে
নিজেকে মুক্ত করে নিলে।
ঠিক সেই মুহূর্ত থেকেই
তুমি হয়ে গেলে-
বেওয়ারিশ ঘুড়ি।
ঘুড়ি ঘুড়ি Reviewed by NINDOOK LIFE on December 13, 2019 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.