প্রত্যাখ্যান 💔
Israt Jahan Tanni
Part_05
...
সকালের নাস্তা সেড়ে রাজ অফিসে চলে গেলো। যাওয়ার আগে নুপুরের কপালে একটা চুমু দিলো। কিন্তু নুপুরের কোনো রেসপন্স পেলোনা। সেদিন লাঞ্চেও নুপুর রাজ কে আর কল করেনি।
নুপুর গোসল সেড়ে ওয়াসরুম থেকে বেরিয়েছে মাত্র। তখনই কলিংবেল বাজলো। নুপুর গিয়ে দরজাটা খোলে আবার চলে এলো। রাজ দরজাটা লাগিয়ে ধীরে নুপুরের পিছনে এগুতে লাগলো। নুপুর সেটা খেয়াল করেনি। নুপুর রুমে গিয়ে খাটের উপর বসলো। পিছনে রাজ ও রুমে ঢুকেই রুমের দরজা আটকিয়ে দিলো। নুপুর কিছুটা আড়চোখে রাজের দিকে তাকালো। কিন্তু কিছুই বললোনা।
- তুমি কি আমার উপর রেগে আছো বাবুইপাখি? নুপুরের হাত দুটোতে ধরে রাজ বললো।
- রাগ করবো কেন? রাগ করার মতো কোনো কারন আছে নাকি?
- আমি জানি তুমি রাগ করে আছো। বিশ্বাস করো, গতকাল দুপুরে ওই কথাগুলো রাগের মাথায় বলেছি। খুব বিজি ছিলাম তো তাই রাগ টা সামলাতে পারিনি। মাফ করে দাও বাবুইপাখি।প্লিজ...
- বুঝলাম..
ফ্রেশ হয়ে আসো। খাবে।
- এখনো রাগ করে আছো? বললাম তো তখন মাথা ঠিক ছিলোনা।
- কখন?
- গতকাল দুপুরে।
- আর রাতে?
- মানে?
- রাত ১ টায় যখন মাতাল হয়ে বাসায় ফিরলা ... আমাকে আর আমার বাবাকে নিয়ে আজেবাজে কথা বললা.. আমাকে আমার বাবার খোঁটা দিলা... তখনও কি কাজের প্রেশারেই বলেছিলা? ভ্রু কুঁচকে কথাগুলো বললো নুপুর।
- রাজ কিছুক্ষন মুখে হাত দিয়ে কি যেনো ভাবলো ভাবলো... তারপর বললো..
- এগুলো আমি বলেছি নাকি?
- আমি কি তোমাকে বানিয়ে বলছি নাকি?
- গতকাল সন্ধ্যায় আমার এক বন্ধু তার বাসায় একটা পার্টি দিয়েছিলো। ওরা আমাকে সেখানেই জোর করে ড্রিংকস করিয়েছে, বিশ্বাস করো...
- ওকে .. যাও বাথরুমে .. ফ্রেশ হয়ে আসো।
রাজ নুপুরকে আলতো অরে জড়িয়ে ধরে একটা চুমু দিলো। তারপর ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
..
বিকেল পাঁচটায় .. নুপুর ছাদের এক কোনায় বসে আছে। আজ বাবা মায়ের কথা খুবই মনে পরছে তার। খুব করে দেখতে মন চাইছে তাদেরকে। কিন্তু কিভাবে দেখবে, তারা যে নুপুরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভাবতেই দুচোখ বেয়ে পানি পরতে লাগলো নুপুরের। হটাৎ করেই ভাবলো.. দেখতে না পারোক, তাদের খবর তো নিতেই পারে।
আজ সন্ধ্যায় রাজ বাসায় চলে এসেছে। নুপুর ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো..
- আজ এতো তারাতাড়ি চলে এলে যে?
- কেন, তুমি খুশি হও নি?
- আমার খুশি আর অখুশি দিয়ে কি হবে। তোমার বাসা, তোমার যখন ইচ্ছা তখন আসবা, আমি বলার কে..?
- হু বুঝেছি, আমার বউটা আমার সাথে অভিমান করে আছে। বউগো মাফ করে দাওনা... আর এমন হবেনা, প্রমিস..
নুপুর কোনো সাড়া দিলোনা রাজের কথায়...
রাজ আবারো বললো..
- মাফ করোনি বউ.. এই দেখো কানে ধরছি, আর এমন করবোনা। বলেই রাজ বাচ্চাদের মতো কান ধরে উঠবস করতে থাকলো..
নুপুর এইবার আর না হেসে পারলোনা। ফিক করে হেসে দিলো.. নুপুরের হাসি দেখে রাজ যেনো হাফ ছেড়ে বাচলো, কান থেকে হাত নামিয়ে নুপুরের পাশে গিয়ে বসলো.. ওর হাতদুটো নিজের দুহাতে বন্দি করলো রাজ।
- অভিমান কমেছে দেখছি বউয়ের। যাইহোক বাচলাম।
- এইবার কমলেও পরের বার কিন্তু কমবে না বলে দিলাম। পরের বার অভিমান করার সুযোগ তুমি পাইবা না বউ।
- মানে?..
- মানে হলো.. পরেরবার আমি এমন কিছু করবোই না, যাতে তুমি অভিমান করতে পারো। রাজ হাসলো.. নুপুর ও হাসলো।
..
পরেরদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠলো নুপুর। ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে ঝটপট রান্না করে নিলো সে। রাজকে অফিসে বিদায় দিয়ে নিজেও তৈরি হয়ে নিলো নুপুর। তারপর কোথায় যেনো বেরিয়ে গেলো...
সকাল ৯:৩০..
গার্লস স্কুলের সামনে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে দাড়িয়ে আছে নুপুর। অপেক্ষা করছে, কিন্তু অপেক্ষার প্রহর কাটছে না তার... আরো কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর ঠিক ৯:২৫ মিনিটে নুপুরের মুখে হাসি ফুটলো.. মনে হয় অপেক্ষার প্রহর কেটেছে তার।
নীরা স্কুলের কাছে আসতেই বড় বোন নুপুরকে দেখতে পেলো। অনেকটা অবাক হলো সাথে অনেক খুশি। দৌড়ে নুপুরের সামনে গিয়ে দাড়ালো নীরা।
- আপু, তুই ? কেমন আছিস? বলেই নুপুরকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো নীরা।
- ভালো আছিরে, তুই কেমন আছিস?
- জানিনা। তুই কি জানিস না, তোকে ছাড়া আমি কেমন থাকতে পারি?
- কাদছিস কেন পাগলি? এইতো আমি এসেছি।
- আবার চলে যাবি সেটাও আমি জানি। মাথা নিচু করে বললো নীরা।
- বিয়ে যখন করেছি যেতে তো হবেই।
আচ্ছা বাদ দে.. তোর খবর কি বল? লেখাপড়া ভালোভাবে করছিস নাকি আগের মতোই ফাঁকিবাজ করিস.. ?
- আমার আর খবর .. এই চলছে আরকি ...
- এভাবে বলছিস কেন? ভালোভাবে লেখাপড়া কর। বাবা মা তো তোর উপর খুব ভরসা করে রে। সেটা নষ্ট করিস না।
যাইহোক,
বাবা মার কি খবর রে? ভালো আছেন উনারা?
- হ্যাঁ .. ভালোই আছে।
- আমার কথা কিছু বলেনা?
- নীরা মাথা নিচু করে আছে। কিছু বলছে না।
- কিরে? কথা বলছিস না কেন?
- মানে, কি বলবো আপু বুঝতেছি না।
- বলতে হবে নারে, আমি সব বুঝেছি। উনারা তো আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাহলে আর আমার কথাই বা জিজ্ঞেস করবে কেন? আমিও যে কি বোকা.. বলেই হালকা হেসে নিজের মাথায় টুকা দিলো নুপুর। নীরা কিছু বলছে না।
- আচ্ছা যাই রে.. অনেক্ষণ হয়েছে এসেছি। তুই ভালো করে পড়িস... আমার মতো ভুল করে বাবা মায়ের মনে কষ্ট দিস না। বলেই নুপুর সেখান থেকে চলে এলো। এতোক্ষন নিজেকে নীরার সামনে স্বাভাবিক রাখলেও এখন আর নিজেকে শান্ত রাখতে পারছে না। পুরোটা রাস্তা কাঁদতে কাঁদতে বাসায় এসেছে নুপুর।
..
ধীর পায়ে নিজের বাসার সামনে এসে দাড়ালো নুপুর। আস্তে আস্তে বাসার ভিতরে প্রবেশ করলো। দরজার সামনে এসে কিছুটা অবাক হলো সে। বাইরে যাওয়ার সময় সে তো দরজা লক করেই গিয়েছিলো। কিন্তু এখন দরজা খোলা কেন? হয়তো মনের ভুলে খোলা রেখে গিয়েছিলো। এসব চিন্তা করতে করতে ভিতরে প্রবেশ করে দরজাটা লক করে দিলো নুপুর। ড্রয়িং রুম পেরিয়ে নিজের রুমে যাবে তখনই দেখতে পেলো সোফায় রাজ বসে আছে। কিছুটা অবাক হয় সে। এতো তারাতাড়ি তো ও কখনো বাসায় আসেনা। রাজের পাশে গিয়ে বসলো নুপুর।
- কি ব্যাপার?. আজ এতো তারাতাড়ি চলে এলে যে?
- কেন? আমি আসাতে তোমার কি কোনো সমস্যা হইচে?
- মানে? আমি কি এইসব বলছি নাকি?
কখনো এই টাইমে আসো না, তাই বল্লাম।
- এই টাইমে আসি না বলেই তো ভালো সুযোগ পেয়েছো। তা কতদিন ধরে চলছে এইসব? সন্দেহের চোখে শান্তভাবে জিজ্ঞেস করলো রাজ।
- বুঝলাম না... এইসব কি বলছো তুমি?
- বুঝছো না, নাকি বুঝতে চাইছো না?
- কি হয়েছে সেটা তো বলো?
- কোথায় গিয়েছিলে তুমি? আমি ভুল করে আমার পার্স টা রেখে গিয়েছিলাম। নিতে এসে দেখি তুমি নাই। সেই দেড় ঘন্টা ধরে বসে আছি। কার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলে তুমি?
- ভুল বুঝছো কেন আমায়? আমি নীরার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।
- সাপ দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করবে না বলে দিলাম। সত্যি করে বলো.. কার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছো..?
- নেশা করে এসেছো নাকি? কি আবল তাবোল বলছো? খানিকটা রেগে গিয়ে নুপুর বললো।
- কি বললি তুই? আমি নেশা করে এসেছি? বলেই নুপুরের গালে দিলো ঠাটিয়ে চড়।
নুপুর গালে হাত দিয়ে নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে। চোখ দুটো পানিতে ছলছল করছে তার। এক দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজাটা লক করে দিলো সে।
.
To be Continue ...
Israt Jahan Tanni
Part_05
...
সকালের নাস্তা সেড়ে রাজ অফিসে চলে গেলো। যাওয়ার আগে নুপুরের কপালে একটা চুমু দিলো। কিন্তু নুপুরের কোনো রেসপন্স পেলোনা। সেদিন লাঞ্চেও নুপুর রাজ কে আর কল করেনি।
নুপুর গোসল সেড়ে ওয়াসরুম থেকে বেরিয়েছে মাত্র। তখনই কলিংবেল বাজলো। নুপুর গিয়ে দরজাটা খোলে আবার চলে এলো। রাজ দরজাটা লাগিয়ে ধীরে নুপুরের পিছনে এগুতে লাগলো। নুপুর সেটা খেয়াল করেনি। নুপুর রুমে গিয়ে খাটের উপর বসলো। পিছনে রাজ ও রুমে ঢুকেই রুমের দরজা আটকিয়ে দিলো। নুপুর কিছুটা আড়চোখে রাজের দিকে তাকালো। কিন্তু কিছুই বললোনা।
- তুমি কি আমার উপর রেগে আছো বাবুইপাখি? নুপুরের হাত দুটোতে ধরে রাজ বললো।
- রাগ করবো কেন? রাগ করার মতো কোনো কারন আছে নাকি?
- আমি জানি তুমি রাগ করে আছো। বিশ্বাস করো, গতকাল দুপুরে ওই কথাগুলো রাগের মাথায় বলেছি। খুব বিজি ছিলাম তো তাই রাগ টা সামলাতে পারিনি। মাফ করে দাও বাবুইপাখি।প্লিজ...
- বুঝলাম..
ফ্রেশ হয়ে আসো। খাবে।
- এখনো রাগ করে আছো? বললাম তো তখন মাথা ঠিক ছিলোনা।
- কখন?
- গতকাল দুপুরে।
- আর রাতে?
- মানে?
- রাত ১ টায় যখন মাতাল হয়ে বাসায় ফিরলা ... আমাকে আর আমার বাবাকে নিয়ে আজেবাজে কথা বললা.. আমাকে আমার বাবার খোঁটা দিলা... তখনও কি কাজের প্রেশারেই বলেছিলা? ভ্রু কুঁচকে কথাগুলো বললো নুপুর।
- রাজ কিছুক্ষন মুখে হাত দিয়ে কি যেনো ভাবলো ভাবলো... তারপর বললো..
- এগুলো আমি বলেছি নাকি?
- আমি কি তোমাকে বানিয়ে বলছি নাকি?
- গতকাল সন্ধ্যায় আমার এক বন্ধু তার বাসায় একটা পার্টি দিয়েছিলো। ওরা আমাকে সেখানেই জোর করে ড্রিংকস করিয়েছে, বিশ্বাস করো...
- ওকে .. যাও বাথরুমে .. ফ্রেশ হয়ে আসো।
রাজ নুপুরকে আলতো অরে জড়িয়ে ধরে একটা চুমু দিলো। তারপর ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
..
বিকেল পাঁচটায় .. নুপুর ছাদের এক কোনায় বসে আছে। আজ বাবা মায়ের কথা খুবই মনে পরছে তার। খুব করে দেখতে মন চাইছে তাদেরকে। কিন্তু কিভাবে দেখবে, তারা যে নুপুরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভাবতেই দুচোখ বেয়ে পানি পরতে লাগলো নুপুরের। হটাৎ করেই ভাবলো.. দেখতে না পারোক, তাদের খবর তো নিতেই পারে।
আজ সন্ধ্যায় রাজ বাসায় চলে এসেছে। নুপুর ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো..
- আজ এতো তারাতাড়ি চলে এলে যে?
- কেন, তুমি খুশি হও নি?
- আমার খুশি আর অখুশি দিয়ে কি হবে। তোমার বাসা, তোমার যখন ইচ্ছা তখন আসবা, আমি বলার কে..?
- হু বুঝেছি, আমার বউটা আমার সাথে অভিমান করে আছে। বউগো মাফ করে দাওনা... আর এমন হবেনা, প্রমিস..
নুপুর কোনো সাড়া দিলোনা রাজের কথায়...
রাজ আবারো বললো..
- মাফ করোনি বউ.. এই দেখো কানে ধরছি, আর এমন করবোনা। বলেই রাজ বাচ্চাদের মতো কান ধরে উঠবস করতে থাকলো..
নুপুর এইবার আর না হেসে পারলোনা। ফিক করে হেসে দিলো.. নুপুরের হাসি দেখে রাজ যেনো হাফ ছেড়ে বাচলো, কান থেকে হাত নামিয়ে নুপুরের পাশে গিয়ে বসলো.. ওর হাতদুটো নিজের দুহাতে বন্দি করলো রাজ।
- অভিমান কমেছে দেখছি বউয়ের। যাইহোক বাচলাম।
- এইবার কমলেও পরের বার কিন্তু কমবে না বলে দিলাম। পরের বার অভিমান করার সুযোগ তুমি পাইবা না বউ।
- মানে?..
- মানে হলো.. পরেরবার আমি এমন কিছু করবোই না, যাতে তুমি অভিমান করতে পারো। রাজ হাসলো.. নুপুর ও হাসলো।
..
পরেরদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠলো নুপুর। ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে ঝটপট রান্না করে নিলো সে। রাজকে অফিসে বিদায় দিয়ে নিজেও তৈরি হয়ে নিলো নুপুর। তারপর কোথায় যেনো বেরিয়ে গেলো...
সকাল ৯:৩০..
গার্লস স্কুলের সামনে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে দাড়িয়ে আছে নুপুর। অপেক্ষা করছে, কিন্তু অপেক্ষার প্রহর কাটছে না তার... আরো কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর ঠিক ৯:২৫ মিনিটে নুপুরের মুখে হাসি ফুটলো.. মনে হয় অপেক্ষার প্রহর কেটেছে তার।
নীরা স্কুলের কাছে আসতেই বড় বোন নুপুরকে দেখতে পেলো। অনেকটা অবাক হলো সাথে অনেক খুশি। দৌড়ে নুপুরের সামনে গিয়ে দাড়ালো নীরা।
- আপু, তুই ? কেমন আছিস? বলেই নুপুরকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো নীরা।
- ভালো আছিরে, তুই কেমন আছিস?
- জানিনা। তুই কি জানিস না, তোকে ছাড়া আমি কেমন থাকতে পারি?
- কাদছিস কেন পাগলি? এইতো আমি এসেছি।
- আবার চলে যাবি সেটাও আমি জানি। মাথা নিচু করে বললো নীরা।
- বিয়ে যখন করেছি যেতে তো হবেই।
আচ্ছা বাদ দে.. তোর খবর কি বল? লেখাপড়া ভালোভাবে করছিস নাকি আগের মতোই ফাঁকিবাজ করিস.. ?
- আমার আর খবর .. এই চলছে আরকি ...
- এভাবে বলছিস কেন? ভালোভাবে লেখাপড়া কর। বাবা মা তো তোর উপর খুব ভরসা করে রে। সেটা নষ্ট করিস না।
যাইহোক,
বাবা মার কি খবর রে? ভালো আছেন উনারা?
- হ্যাঁ .. ভালোই আছে।
- আমার কথা কিছু বলেনা?
- নীরা মাথা নিচু করে আছে। কিছু বলছে না।
- কিরে? কথা বলছিস না কেন?
- মানে, কি বলবো আপু বুঝতেছি না।
- বলতে হবে নারে, আমি সব বুঝেছি। উনারা তো আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাহলে আর আমার কথাই বা জিজ্ঞেস করবে কেন? আমিও যে কি বোকা.. বলেই হালকা হেসে নিজের মাথায় টুকা দিলো নুপুর। নীরা কিছু বলছে না।
- আচ্ছা যাই রে.. অনেক্ষণ হয়েছে এসেছি। তুই ভালো করে পড়িস... আমার মতো ভুল করে বাবা মায়ের মনে কষ্ট দিস না। বলেই নুপুর সেখান থেকে চলে এলো। এতোক্ষন নিজেকে নীরার সামনে স্বাভাবিক রাখলেও এখন আর নিজেকে শান্ত রাখতে পারছে না। পুরোটা রাস্তা কাঁদতে কাঁদতে বাসায় এসেছে নুপুর।
..
ধীর পায়ে নিজের বাসার সামনে এসে দাড়ালো নুপুর। আস্তে আস্তে বাসার ভিতরে প্রবেশ করলো। দরজার সামনে এসে কিছুটা অবাক হলো সে। বাইরে যাওয়ার সময় সে তো দরজা লক করেই গিয়েছিলো। কিন্তু এখন দরজা খোলা কেন? হয়তো মনের ভুলে খোলা রেখে গিয়েছিলো। এসব চিন্তা করতে করতে ভিতরে প্রবেশ করে দরজাটা লক করে দিলো নুপুর। ড্রয়িং রুম পেরিয়ে নিজের রুমে যাবে তখনই দেখতে পেলো সোফায় রাজ বসে আছে। কিছুটা অবাক হয় সে। এতো তারাতাড়ি তো ও কখনো বাসায় আসেনা। রাজের পাশে গিয়ে বসলো নুপুর।
- কি ব্যাপার?. আজ এতো তারাতাড়ি চলে এলে যে?
- কেন? আমি আসাতে তোমার কি কোনো সমস্যা হইচে?
- মানে? আমি কি এইসব বলছি নাকি?
কখনো এই টাইমে আসো না, তাই বল্লাম।
- এই টাইমে আসি না বলেই তো ভালো সুযোগ পেয়েছো। তা কতদিন ধরে চলছে এইসব? সন্দেহের চোখে শান্তভাবে জিজ্ঞেস করলো রাজ।
- বুঝলাম না... এইসব কি বলছো তুমি?
- বুঝছো না, নাকি বুঝতে চাইছো না?
- কি হয়েছে সেটা তো বলো?
- কোথায় গিয়েছিলে তুমি? আমি ভুল করে আমার পার্স টা রেখে গিয়েছিলাম। নিতে এসে দেখি তুমি নাই। সেই দেড় ঘন্টা ধরে বসে আছি। কার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলে তুমি?
- ভুল বুঝছো কেন আমায়? আমি নীরার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।
- সাপ দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করবে না বলে দিলাম। সত্যি করে বলো.. কার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছো..?
- নেশা করে এসেছো নাকি? কি আবল তাবোল বলছো? খানিকটা রেগে গিয়ে নুপুর বললো।
- কি বললি তুই? আমি নেশা করে এসেছি? বলেই নুপুরের গালে দিলো ঠাটিয়ে চড়।
নুপুর গালে হাত দিয়ে নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে। চোখ দুটো পানিতে ছলছল করছে তার। এক দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজাটা লক করে দিলো সে।
.
To be Continue ...
প্রত্যাখ্যান- Part_05
Reviewed by NINDOOK LIFE
on
January 26, 2020
Rating:
No comments: