লতার আত্মা" "পর্ব:-১

লতার কাটা মাথাটা সামনে নিয়ে বসে আছি।
শরীরের পুরো অংশটাই একটু পর পর কেঁপে উঠছে।
প্রচন্ড ভয় লাগছে আমার, লতার দেহটার দিকে তাকাতে।চোখ গুলো এখনো খোলা,আমার দিকে তাকিয়ে আছে যেনো সে ও আমাকে এখনি হত্যা করবে।কিন্তু তা আর সম্ভব না।
একটু আগেই লতাকে হত্যা করেছি নিজ হাতে।পুরো ঘরটাই রক্ত গঙ্গা হয়ে গেছে।আমার সাদা জামাটা লতার রক্তে লাল হয়ে গেছে।প্রচন্ড হাত পা কাঁপছে।ভয় নাকি অনুশোচনা বুঝতে পারছি না।ভুল করার আগে মানুষের অনুশোচনা হয় না,অনুশোচনা হয় ভুল করার পর।আমারোও সেটি হচ্ছে এখন।
এই মুহুর্ত্বে লতার কাটা মাথাটা কি করা যায় সেটাই ভাবছি।পুরো শরীরের থেকে মাথাটা আলাদা করে ফেলেছি, ব্যাগে করে আনা সেই ধারালো চাকুটা দিয়ে।বেশ কিছুক্ষন পুরো দেহটা কেঁপেছিলো,এখন নিস্তেজ হয়ে গেছে।মাথার অংশ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরন হচ্ছিলো।
পুরো রুমটায় কেমন একটা ভৌতিক রুপ ধারন করে আছে।আমার পুরো শরীরে হঠাৎ ভয় লাগতে শুরু করছে।পুরো রুমটার উষ্ঞতা যেনো ধীরে ধীরে বাড়ছে।মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় মারা গেলে যতটুকু ভয় লাগে খুন বা আত্মহত্যা হয়ে যাওয়ার পর ভয়টা অনেক গুন বেড়ে যায়।
লতাকে মারার পরিকল্পনাটা ছিলো আমার বেশকিছু দিন আগের।আমার সাথে ওর ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো গত দুইবছর।আমাদের দুজনের বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক ও হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।কিন্তুু আমি কখনো চাইনি সে এই কথাটা কাউকে বলুক কিংবা কারো কাছে প্রকাশ করুক।কিন্তু লতা এই মুহুর্ত্বে প্রেগন্যান্ট।ও আমাকে না জানিয়ে এই কাজটা করেছে।আর এই ক্ষোভ থেকে লতাকে এই হোটেলে নিয়ে আসা ভুলিয়ে ভালিয়ে।
রাগের মাথায় আমি যাই করিনা কেনো আমার হুঁশ থাকে না।লতাকে মারার সময় এই অপরাধ বোধটা কাজ করেনি,কিন্তু এখন করছে।নিজের মধ্যে খুব ঘৃনা হচ্ছে।তবে এই মুহুর্ত্বে আমার নিজেকে বাঁচাতে হবে।লতার মৃত দেহটা যেকোন ভাবে সরিয়ে ফেলতে হবে।
এই পুরো শরীর আর লতার মাথাটা কোন ব্যবস্থা করতে হবে।লতার কাটা মাথাটা ফ্রিজে ডুকিয়ে দিলাম যদি বরফ জমে যায় তাহলে ব্যাগে করে নিয়ে যাওয়া যাবে।পুরো ঘর রক্তে লাল হয়ে গেছে।
রক্ত আর রক্ত।এই মুহুর্ত্বে রক্তগুলো পরিষ্কার করতেও খুব ভয় হচ্ছে,কখন না জানি আবার কে চলে আসে।লতার দেহটা এখান থেকে বের করার কোন উপায় নেই।হোটেল রুমের নিচে ম্যানেজার থাকে যা করার এই খানেই করতে হবে।
রাতে পালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।সবাই সন্দেহ করতে পারে।যা করার খুব দ্রুত করতে হবে।আর সকালের আগেই পালিয়ে যেতে হবে।লতার লাশটাকে টুকরো টুকরো করে ফেললে খারাপ হয় না।এই অংশগুলো না হয় বাথরুমে ফেলে দেওয়া যাবে,তবে মাথাটা কাটা যাবে না।এইটার অন্য কোন ব্যবস্থা করতে হবে।
এই মুহুর্ত্বে আমার দমটা যেনো বন্ধ হয়ে আসছে,কাল না হয় যাওয়ার সময় ব্যাগে করে কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে,তারপর না হয় কোথাও ফেলে দিবো।
হঠাৎ করে দরজায় কে যেনো নক করলো,,,
টক টক টক,,,,,
কে ওখানে,কে??
(কোন শব্দ নেই)
আবার (টক টক টক)
কে বললাম, কে ওখানে??
বাইরের দরজায় কে যেনো টুকো দিচ্ছে।সারা শরীরে রক্ত নিয়ে এই সময় কোন ভাবেই দরজা খোলা যাবে না।
কে ওখানে কে?
সামনে এগিয়ে এসে দরজার সেইফটি গ্লাস দিয়ে দেখছি।
কাউকে দেখতে পারছি না।
হঠাৎ
স্যার আমি সুমন বলছি।স্যার আপনাদের কি আর কোন কিছু লাগবে।আমরা চলে যাবো,একটু পর।
-- না না,আমরা ঘুমিয়ে পরেছি,আর কিছু লাগবে না।
ওকে স্যার,শুভ রাত্রি।
বাঁচা গেলো,এই যদি ধরা খেতাম তাহলে তো শেষ।
বসে বসে লতার দেহটা ছোট অংশ করছি,ভয়ানক একটি কাজ।খুবি ভয়ানক।মনে হচ্ছে শরীরের এক একটি অংশ যেনো নেড়ে নেড়ে উঠছে।প্রচন্ড ঘামছি।
ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছি।
পুরো ঘরের সব রক্ত এক এক করে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে ফেলছি,,,,,জমাট বেধে গেছে রক্তগুলো।পুরো শরীরের এতো অংশ কোন ভাবেই যেনো ডুকতে চাইছে না ছোট গর্ত দিয়ে।না একটা কাজ করতে হবে।কোন কিছু দিয়ে ঠেলে নিচে ডুকিয়ে দিতে হবে,পুরো ঘরটাই ঘুরে আসলাম,তেমন কিছুই পাচ্ছি না।
শেষমেশ হাত দিয়ে বাথরুমের গর্তটাই এক একটা করে ফেলছি,আর নিচের দিকে ঠেলে ডুকিয়ে দিচ্ছি।
সব ডুকিয়ে দিয়েছি,আর কয়েকটা অংশ বাকী আছে।হঠাৎ প্রচন্ড ঠান্ডা একটা হাতের স্পর্শ পেলাম,,,,,,,খুব জোরে হাতটা টান দিয়ে আনতে চায়ছি,না আনতে পারছি না।
কেউ যেনো ভেতর থেকে হাতটা টেনে ধরেছে। যেনো আমাকে ভিতরেই ডুকিয়ে ফেলবে।
.
চলবে,,,,,,,,,,,
লতার আত্মা" "পর্ব:-১ লতার আত্মা" "পর্ব:-১ Reviewed by NINDOOK LIFE on January 28, 2020 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.