অতঃপর গণিকার সাথে পার্ট ঃ ৬।



আমি মায়াকে বললাম, কেন তুমি এ অন্ধকার পথে আসলে? মায়া আমার দিকে চেয়ে কি যেন ভাবলো মনে মনে। পরে সে বলল, ভাইজান নাই বা জানলেন কষ্টের কাহিনী । আপনার কেনো এত জানার কৌতূহল? কতজনের সাথেই তো সময় কাটালাম কেউ তো কাউকে জানতে চায় না,বুঝতেও চাই না। সবাই শুধু নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। জানেন ভাইজান প্রতিদিন কতমানুষের সাথে পরিচয় হয়, কত জনেই তো আসে আমার কাছে। কেউ কেউ এতটাই হিংস্র ভয়ানক পশু আমাগোরে মানুষই মনে করে না। আমরাও তো ওদের মতো রক্ত মাংসের মানুষ । আমগো শরীর তো আর পাথরের তৈরি না। প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষদের জন্য সাজতে হয়। জানেন ভাইজান আমার এক বান্ধবী এক সপ্তাহ হলো মারা গেছে । মেয়েটা খুব শুকনো ছিল । এজন্য কাস্টমার তার কাছে কম আসতো। তার বৃদ্ধ বাবা খুব অসুস্থ । ডাক্তার কয়ছে মেলা টেকা লাগবো । তাই মেয়েটা গরু মোটাতাজাকরনের ট্যাবলেট খাইছে। অল্প দিনের মাঝেই শরীর ফুলে মোটা হয়েছে । এদিকে কাস্টমারের সংখ্যাও বাড়তে লাগলো। মেয়েটার টেকার খুব দরকার ছিল । তাই রাত দিন কাস্টমারদের সাথে কাটাতে লাগল। মেয়েটার শরীর আর সহ্য করতে পারছিলো না। মুখে বড় বড় কামড়ে দাগ লাল হয়ে ফুলে গেছে । ঠোঁটের একপাশের চামড়া নেই মনে হইছে পাগলা কুত্তায় ওরে কামড়াইছে। অল্প দিনেই খুব অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার অভাবে মাইয়াটা মারা যায়। আমি নীরব হয়ে মায়ার কথাগুলো শুনতেছিলাম। বললাম, তুমি কেনো এসব ছেড়ে দিচ্ছোনা? মায়া বলল, কাজ ছেড়ে দিলে খামু কি? এ সমাজের সভ্য মানুষগুলো দিনের বেলায় আমাদের ঘৃণা করে। কুকুরের চেয়েও নিকৃষ্ট মনে করে আমাদের। অথচ বেলা শেষে আমাদের কাছে এসে আদিম খেলায় মেতে ওঠে। আমাদেরকে রাতের রাণী মনে করে। আমাদের কাছে এসে শান্তি খুঁজে। জানেন ভাইজান, আমি নিজে থেকে এ পথে আসি নি। আমারো স্বপ্ন ছিল কাউকে নিয়ে সুখী হবার। একটা সুন্দর সংসারের কিন্তু সবার কি আর আশা পূরণ হয়? আমি ছোট বেলায় মা বাবা হারিয়েছি । ভাইদের সংসারে বড় হয়েছি। ভাইয়েরা বিয়ে করার পর ভাবীরা আমাকে সহ্য করতে পারতো না। আমাকে দিয়ে সব কাজ করাতো। সংসারের বোঝা মনে করতো আমাকে। আমি যখন ১৫ বছরে পা দিলাম একদিন বড় ভাবী ভাইকে বলে তার এক দুঃসম্পর্কের মামাতো ভাইয়ের সাথে আমাকে বিয়ে দিল। বিয়ের পরে আমার জীবনে আসলো সবচেয়ে বড় ঝড় । বিয়ে নিয়ে সব মেয়ের মনেই অনেক স্বপ্ন থাকে। আমার বয়স অল্প হওয়ায় কিছুই বোঝতাম না। অজানা ভয় নিয়ে বাসর ঘরে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম । আমার স্বামী আমার থেকে ১৭ বছরের বড় ছিল। তার বয়স তখন ৩২ বছর। রাত ১১ টায় আমার স্বামী বাসর ঘরে ঢুকল । আমি গিয়ে ভয়ে ভয়ে ওনার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলাম। পরে ঘোমটা টেনে নিয়ে বিছানাতে বসলাম। সে বিছানায় এসেই বলল, দেখতে তো খুব কচি লাগছে। এত ঢং না করে কাপড় চোপড় সব খুলে ফেল। বিয়ে হয়েছে এত ঢং কিসের। আমার খুব ভয় আর লজ্জা লাগছিল । ভাবলাম লোকটা নির্লজ্জের মতো এসব কি বলে? লোকটা ক্ষুধার্ত বাঘের মতো আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমার আর কিছু মনে নেই জ্ঞান হারালাম । বেশকিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে দেখি সারা শরীর লাল হয়ে ফুলে গেছে আর শরীরে প্রচন্ড ব্যথা। শক্তি ছিল না আমার তাই বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছিলাম না। লোকটা ঘরে এসেই বলা শুরু করলো, এই মায়া শুন বিয়ের সময় তোর ভাইয়েরা টেকা দেই নাই । কথা ছিল বিয়ের দিন ৫০ হাজার টেকা দিবে কিন্তু টেকা দেয় নি। আমি তোদের জন্য সরাইখানা খুলে বসি নি যে এমনি এমনি তুকে খাওয়াবো। তাই তুকে দিয়ে আমার টেকা উদ্ধার করবো। আজ খুব সেজেগুজে থাকিস। সন্ধ্যা বেলায় আমার কিছু বন্ধু আসবে তুই ওদের সাথে থাকবি। ওরা বিনিময়ে আমাকে টেকা দিবে। আর শুন আসলেই তুই খুব সুন্দরী। তুর শরীরটা খুব সুন্দর। তকে দিয়ে ব্যাবসা করালে ভালো টেকা পাওয়া যাবে। আমার বন্ধুদেরকে ভালো সেবা দিস, যেন ওরা বারবার তোর কাছে আসে
অতঃপর গণিকার সাথে পার্ট ঃ ৬। অতঃপর গণিকার সাথে পার্ট ঃ ৬। Reviewed by NINDOOK LIFE on July 13, 2019 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.