আজ রাস্তায় নামার পর পরই সেনাবাহিনীর হাতে পড়লাম।
আমার পাশে আরো পাঁচজন কে ধরল।
ওরাও আমার মতো বেরিয়েছিল, তবে আমার অপরিচিত ছিল।
আমাদের ছয়জনকে একপাশে এনে পাশাপাশি লাইন ধরে দাঁড় করানো হলো।
আমি দুর্ভাগ্যক্রমে সবার শেষে পড়ে গেলাম।
বড় একটা লাঠি নিয়ে গ্রুপ প্রধান লাইনের ১ম জনের সামনে এলেন। লাঠিতে হাত দিয়ে মালিশ করতে করতেই, সেদিকে তাকিয়ে প্রথম জনকে জিজ্ঞাসা করলেন,"তুই রাস্তায় কেন নেমেছিস, এই কারফিউতে?"
সে আমতা আমতা করে বলল," স্যার! আমি ছাত্রলীগ! তাই নেমেছি!"
"কি ছাত্রলীগ? " বলেই, স্যার দিলেন আগাগোড়ায় মাইর। আমরা সবাই নিচের দিকে তাকিয়ে আছি। শুধু কানে বেচারার ছাত্রলীগের শব্দ আসতে লাগল," ওমাগো, ও আল্লাহ গো, ও আব্বা গো, আমি কছম আর ছাত্রলীগ করুম না!"
এই শব্দগুলো শুনে আমি ঢুক গিলতে থাকলাম।
আধাঘন্টা মারার পর, এবার এম্বুলেন্স এসে তাকে নিয়ে গেল।
এবার, এলো লাইনের ২য় জনের কাছে।
তাকে স্যার জিজ্ঞাসা করলেন,"তুমি কেন এসেছো!"
সে কাঁদতে কাঁদতে বলল," স্যার! আমার দাদা অসুস্থ, তাই ওষুধ নিতে এসেছি।"
স্যার বললেন," মশকরার করার জায়গা পাওনা? ওষুধের দোকান তো অনেক আগেই ফেলে এসেছিস।"
"মিথ্যা কথা" আর বলবি বলেই স্যার উড়াধুড়া মাইর দিতে থাকলেন।
কানে শুধু তার আর্তচিৎকার কানে আসতে লাগল।
সে চিল্লাতে লাগল," ও দাদা, ও দাদী, ও নানা, ও নানী বলে!"
পরে তাকে ২০ মিনিট ধরে মেরে কোমড় ভেঙ্গে ঘাড় ধরে পিছনে আরেক লাথি মেরে তাড়িয়ে দিলো।
এবার, এলো স্যার ৩য় জনের কাছে।
ওর কাছে আসতেই সে স্যারের পা ধরে হাউমাউ করে কান্নাকাটি শুরু করে দিলো। বলল," আমি আর জীবনেও আমি রাস্তায় আসমু না। আমার ভুল হইছে। আমার চৌদ্দগোষ্ঠিও আর আসবেনা। আমারে মাফ কইরা দেন!"
স্যার" আজ এলি কেন?" এটা বলেই কিল ঘুষি মারতে লাগলেন। চেহারার ১০ মিনিটে আলু কয়েকটা বানিয়ে ছেড়ে দিলেন।
এবার এলেন,৪র্থ জনের কাছে।
সে কি বলবে, কার নাম নিবে, এগুলো ভেবেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।
তাকে এম্বুল্যান্স করে হাসপাতালে পাঠানো হলো।
আমি মনে মনে ভাবলাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেই বলব, আমার করোনা ভাইরাস। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার পাশের জন বলে দিলো," স্যার! আমার করোনা ভাইরাস। তাই আইডিসিআর এ যাইতেছিলাম।"
স্যার তাকে জিজ্ঞাসা করলেন," কীভাবে বুঝলা তোমার করোনা ভাইরাস।
সে ভয়ে উল্টা বলে দিলো, বলল, " স্যার! আমার দুইদিন ডায়রিয়া! তাই বুঝছি।"
স্যার, একমিনিট "থ" হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পর,
এবার লাঠি সব গুলো একত্র করে তারে পিঠাতে লাগলেন। তাকে শেষে আইসোলেশনে পাঠিয়ে দিলেন।
এবার, আমার সামনে এলেন আমি কি বলব, সব তো আমার পূর্বের বক্তা বলে ও করে দিয়ে গেছে। আবার না বললেও বেশী মাইর খেতে হবে।
তাই আমি কিছু না ভেবেই আমি বললাম," স্যার! আমি নেটওয়ার্কের জন্য রাস্তায় নামছি। একটা ইমার্জেন্সি ফোন দিতে হবে, তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে। আপনি যা করার করতে পারেন!
স্যার, কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। তারপর, তিনি লাঠি গুলো রেখে, আমার কাঁধে হাত দিয়ে বললেন," তুমি কি robi ইউজ করো?"
আমি বললাম," জ্বী স্যার।"
স্যার, বললেন, " তুমি যেতে পারো। কারণ এটা আমিও ইউজ করি। হারামজাদার সিম, যদি বাসায় একটু নেটওয়ার্ক থাকত।
দোকান খুললে gp সিম নিয়ে নিবো।
যাও বাবা।"
আমি স্যারকে সালাম দিয়ে দৌড় দিয়ে চলে এলাম।।
আজ রাস্তায় নামার পর পরই সেনাবাহিনীর হাতে পড়লাম। আমি স্যারকে সালাম দিয়ে দৌড় দিয়ে চলে এলাম।।
Reviewed by NINDOOK LIFE
on
April 02, 2020
Rating:
Reviewed by NINDOOK LIFE
on
April 02, 2020
Rating:

No comments: