যে সাবজেক্টটা কঠিন বলে

যে সাবজেক্টটা কঠিন বলে, তুমি ফেল করেছ। সেই একই সাবজেক্টে, তোমার ক্লাসের অর্ধেকের বেশি পোলাপান ৬০ এর উপরে মার্কস পেয়েছে। যে বৃষ্টির কারণে, যে ঠাণ্ডার ভয়ে তুমি ঘর থেকে বের হওনি। সেই একই বৃষ্টিতে ভিজে, একই ঠাণ্ডায় কেপে কেপে, রিক্সাওয়ালারা ঠিকই সংসার চালানোর টাকা কামিয়ে ঘরে ফিরেছে। যে শহরে ঘুষ, অনিয়ম আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে বিজনেসে নামার স্বপ্নটা মাটি চাপা দিয়ে রেখেছো। সেই একই শহরে তোমার পাশের ফ্ল্যাটের একজন, ব্যবসায় নেমে ঠিকই এগিয়ে গেছে। সো, সমস্যাটা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, শীতের ঠাণ্ডা কিংবা সাবজেক্ট কঠিন হওয়ার মধ্যে না। সমস্যাটা তোমার মধ্যে। তবে সে সমস্যাটা তোমার স্বপ্ন, সাহস, চেষ্টার কমতি বা সময়ের অভাবের মধ্যে না।
শুনো, যে সিগারেট ছাড়তে চায়, সে সিগারেট ছাড়তে পারে না। যে সামনের সেমিস্টারে দুনিয়া উল্টায় ফেলতে চায়, সে সেই সেমিস্টারেও আগের সেমিস্টারের মতো লাড্ডু মারে। তাই সিগারেট ছাড়ার স্বপ্ন বাদ দিয়ে, আজকে দুপুরে লাঞ্চ শেষ করে সাথে সাথে সিগারেট না ধরিয়ে, ৫ মিনিট পরে সিগারেট জ্বালানোর টার্গেট সেট করতে হবে। পরেরদিন ঠিক একই কাজ করার চেষ্টা করতে হবে। পুরা সেমিস্টার পড়ে তাল গাছে উঠে যাওয়ার চিন্তা না করে, ক্লাস লেকচার শেষ হওয়ার সাথে সাথে, ক্লাস লেকচারের একটা টপিক নিয়ে ৫ মিনিট বসে বসে বুঝার চেষ্টা করতে হবে।
কেউ যুদ্ধ জয় করে না, একজন একজন করে শত্রুপক্ষের সৈন্যকে পরাজিত করে। কেউ সাগর পাড়ি দেয় না, বৈঠা মেরে মেরে, ইঞ্চি ইঞ্চি করে সামনে এগুতে থাকে। কেউ বিশ্ব সেরা খেলোয়াড় হয় না, একটার পর একটা ম্যাচে, দুই-একটা করে গোল করতে থাকে। সফলতা কোন লটারি না। জন্মদিনে প্রেমিকার উপহারও না। সফলতা হচ্ছে- কনসিসটেন্সি (ধারাবাহিকতা)। এই কনসিসটেন্সি, রেজাল্ট বা আউটকামের কনসিসটেন্সি না। এইটা চেষ্টার কনসিসটেন্সি। লেগে থাকার কনসিসটেন্সি।
মানুষের চেষ্টা হচ্ছে পানির মতো। চান্স পাইলেই গড়িয়ে নিচে নেমে যাবে। রিলাক্স করার কোন পাত্র পাইলে, সেই পাত্রের আকার ধারণ করবে। আরো বেশি চান্স পাইলে, নদীর স্রোতের সাথে ভেসে ভেসে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে তোমারে ডুবাবে। তাই রিলাক্স হইও না। লম্বা টার্গেট সেট করো না। বরং নেক্সট স্টেপের দিকে তাকাও। সেই ছোট স্টেপটাই নিয়মিত দিতে থাকো। দেখবা, ছোট ছোট স্টেপ, পানির পাম্পের মতো তোমার চেষ্টার পানিকে একটু একটু করে উপরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই একটু একটু করে এগিয়ে যেতে থাকলেই, একসময় পাহাড়ের চূড়া এসে তোমার পায়ের নিচে শিস বাজাবে।
ভালো সাবজেক্ট.... ভালো ইউনিভার্সিটি....
এসব কিছুই তোমার বড় হওয়ার জন্য কিছুই না।
তবে এগুলো তোমাকে বড়ো করার কয়েকটা রাস্তা মাত্র।
বড় হওয়ার জন্য এছাড়াও অসংখ্য রাস্তা খোলা আছে।
তুমি যদি মনে করো যে ভালো ভার্সিটি তে পড়লেই বিশাল কিছু হয়ে যাবো তবে সেটা হবে তোমার মস্তবড়ো ভুল।
আমার পরিচিত অনেক ভাই আছে যারা বাংলাদেশের নামী ভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন করে ও ভালো জব পাচ্ছে না।
আর পেলে ও ঘুষ লাগবে ১৫ থেকে ১৮ লাক টাকা।
বুয়েটের মত প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে যদি ভালো জব পেতে এত টাকা লাগে তবে এত্ত দিনের কষ্টের মর্যাদা কোথায়???
আসলে,
বড় তারাই হয় যাদের বড় হওয়ার জেদ আছে। স্বপ্ন দেখে আকাশছোঁয়া, যারা বড় হওয়ার রাস্তা নিজ হাতে গড়তে জানে।
তাই,
ভালো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চোখ বুজে রিল্যক্সে থাকলে বড় হওয়ার স্বপ্ন তোমার জন্য না।
তুমি যেখানেই থাকো না কেন... তোমার কর্মই তোমাকে বড় করবে । অজোপাড়া গাঁ এর সাধারণ ছেলেটা ও অনেক উঁচু পর্যায়ে যেতে পারে কেবলমাত্র
কর্মগুনে।
আজ আমাদের মাথায় ঢুকে গিয়েছে যে বুয়েট মেডিকেল ভার্সিটি বিসিএস এই সবই উপরে .......
এই ধারণার গভীর অন্ধকারে অন্ধ হয়ে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে কত সব ভবিষ্যৎ....
তুমি তোমার আশেপাশে নিজেই জরিপ করে দেখোতো
ভালো ভালো পোষ্টে যারা আছেন তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড টা কি??
কপালের দোষ দিয়ে কপালে হাত দিয়ে বসেতথাকে তারাই যাদের কোন স্বপ্ন নাই।
যাদের বড় হওয়ার স্বপ্ন আছে তাদের কাছে কপাল বলে কিছু নাই।
উপরে ওঠার জন্য মই নাই? তো কিহয়েছে? নিজে মই তৈরি করে উপরে উঠ।
কেউ তোমাকে বড় করে দিবে না। নিজের খাবার নিজেরই ঢোক গিলে খেতে হবে।
আফসোস হচ্ছে মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু।
তুমি একটা বিষয় নিয়ে আফছোচ করতেছো তো তোমার বাকি রাস্তা গুলো বন্ধ হতে থাকছে ।
আজ এই পথে কিছু পেলাম না তো কি হয়েছে??
আরো দশটা পথ দেখি......
যারা এভাবে সাফল্যের
পিছে ছুটে সাফল্য কেবল তাদেরই...
যারা কোন কিছু তুচ্ছ করে দেখে সাফল্য তাদের জন্য নয়।
তুমি পারবে... বুকে বিশ্বাস রাখো... তুমি পরবে...
তুমি যেখানে আছো যে মুহুর্তে আছো যেখান থেকেই তোমার জীবন যুদ্ধ শুরু করো।
আজ থেকে... এই মুহুর্ত থেকেই শুরু করো...
সাফল্য শুধু তোমার..!!

যে সাবজেক্টটা কঠিন বলে যে সাবজেক্টটা কঠিন বলে Reviewed by NINDOOK LIFE on December 13, 2019 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.