HSC Final 2020 রুটিন

রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা হলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই হবে একবারে নিশ্চিত থাকো৷ সে হিসেবে সময় মাত্র ৬০ দিনের মত। হাতে ৬০ দিন হাতে থাকলেও পড়ার মুখ্য টাইম পাবা ৩০ দিন। যেহেতু শেষের কয়েকটা দিন তোমার পুর্ন রেস্ট সহ অনেক আনুসাঙ্গিক কাজ থেকে যায়৷ তাই এখন থেকে মনে করো আর মাত্র ৩০ দিন আছে। আর এই ৩০ দিনে তোমাকে এ প্লাস ছিনিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তাই তোমাদের এ প্লাস ছিনিয়ে নিয়ে আসার জন্য সামনের এক মাসেট রুটিন কেমন হতে পারে......তাই বলে দিচ্ছি-
অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করে, ভাইয়া রুটিন
কিভাবে করবো? এখন তো আর বেশীদিন নাই। মাত্র একমাস সময়। এতো পড়া কীভাবে গুছিয়ে পড়া যায়? অনেকেই আবার মডেল টেস্টও দিবা। এই পর্যন্ত অনেক জন আমাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেছে। তাই আজ এই শেষ সময়ের জন্য কিভাবে একটা ইফেক্টিভ রুটিন বানানো যায় সেটা বলার চেষ্টা করবো।
তার আগে কিছু কথা না বললেই নয়। এতোদিন যখন যেভাবে ইচ্ছা পড়েছো, অনেক শান্তিতে চলেছো, যখন যা ইচ্ছা করেছো। একদিন রাত ১১ টায় ঘুমিয়েছো তো আরেকদিন ভোর ৪ টায়। কিন্তু এখন আর এরকম উরাধুরা নিয়মে চললে হবে না। একটা স্পেসিফিক রুটিন তাই এখন খুবই দরকার। তা না হলে দেখা যাবে পরীক্ষা চলে আসবে কিন্তু তুমি সবগুলো বিষয় টাচ করতে পারবা না। কিন্তু পরীক্ষার আগের এই রিভাইস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই রিভাইসের ইফেক্টিভনেসের উপরেই তোমার এ প্লাস পাওয়া না পাওয়া অনেকাংশে নির্ভর করে। তাই ভালোভাবে প্রিপারেশন কম্পলিট করতে হলে অবশ্যই একটা ভালো প্ল্যানিং ও একটি ভালো রুটিন থাকা আবশ্যক। এখানে কখন কোন কাজ করবা সব থাকতে হবে।
রুটিন বানানোর মৌলিক উপাদান গুলো হলো সময়, পড়াশুনা ও অন্যান্য কাজের লিস্ট এবং রেস্ট। এই চারটার সমন্বয়েই গঠিত হয় রুটিন।
একটা পারফেক্ট রুটিন বানানোর জন্য নিচের
ধাপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারো।
১. সবসময় স্পেসিফিক রুটিন করবা। কবে কোন সাব্জেক্ট পড়বা, কতটুকু সময়ের মধ্যে কতটুকু শেষ করবা পুরো স্পেসিফিক রুটিন বানাতে হবে।
আর চেষ্টা করবা একসাথে এক সপ্তাহের রুটিন বানানোর জন্য। এর কম সময়ের জন্য করলে বার বার রুটিন বানাতে টাইম নষ্ট হবে আবার এর চেয়ে বেশী দিনের সময়ের জন্য করলেও রুটিনটা ইফেক্টিভলি হবে না। কারণ এক সপ্তাহ পরে কখন কি হবে, না হবে তা
কেউ বলতে পারেনা। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে কোন দিন কিরকম হতে পারে সেটার একটা অনুমান করা যেতে পারে।
২. এখন যে দিনের রুটিন টা করবা সেই দিনের প্রতিটা কাজ লিখে ফেল খাতায়। একটা লিস্ট বানাও যে কি কি করবা একটা দিনে। যেমন-
ঘুম
পড়া
মাইন্ড রিফ্রেস করার জন্য রেস্ট
আবার পড়া
এই গ্রুপে এসে স্টাডি করা
আবার পড়া।
৪. এবারের কাজ হলো তোমাকে খুজে বের করতে হবে যে সারাদিনে তুমি কখন কখন কতো ঘন্টা পড়তে পারবা। এখানে খেয়াল রাখতে হবে যে প্রতি দুই ঘন্টা পর পর যেন ৩০ মিনিটের একটা ব্রেক থাকে। এসময়ে ব্রেইন এ বেশী চাপ না ফেলাই ভালো, তাই ব্রেক নিয়ে নিয়ে পড়বা, এতে মনযোগ ধরে রাখা যাবে আর পড়াগুলোও ব্রেইনে দীর্ঘস্থায়ী হবে।
যেমন এভাবে করা যেতে পারে-
সকাল-
০৯.০০ - ০৯.৩০- ফ্রেশ হওয়া
০৯.৩০ - ১১.৩০ - স্টাডি - ২ ঘন্টা
১১.৩০ - ১২.০০ - রেস্ট
১২.০০ - ০২.০০ - স্টাডি - ২ ঘন্টা
০২.০০ - ০৩.৩০ - নামাজ, লাঞ্চ
০৩.৩০ - ০৫.০০ - রেস্ট - ১.৫ ঘন্টা
০৫.০০ - ০৭.০০ - স্টাডি ২ ঘন্টা
০৭.০০ - ০৭.৩০ - রেস্ট
০৭.৩০ - ০৯.৩০ - স্টাডি - ২ ঘন্টা
০৯.৩০ - ১০.৩০ - নামাজ, ডিনার
১০.৩০ - ১১.৩০ - গ্রুপে এসে স্টাডি ১ ঘন্টা
১১.৩০ - ০২.০০ - স্টাডি ২.৫ ঘন্টা
০২.০০ - ০৯.০০ - ঘুম - ৭ ঘন্টা
সুতরাং এভাবে করলে তুমি মোট ১০.৫ ঘন্টা
টেবিলে এবং ১ ঘন্টা গ্রুপে পড়াশুনা করতে পারবা। মোট ১১.৫ ঘন্টা। যা পারফেক্টলি করলে আর কিছু লাগবে না গোল্ডেন পেতে, বর্তমানে তোমার প্রিপারেশন যাই হোক না কেন।
৫. এবার তোমার পড়ার সময়গুলো আবার আলাদা করে লিখে নাও। উপরের উদাহারন থেকে বললে এভাবে-
০৯.৩০ - ১১.৩০ - ২ ঘন্টা
১২.০০ - ০২.০০ - ২ ঘন্টা
০৫.০০ - ০৭.০০ - ২ ঘন্টা
০৭.৩০ - ০৯.৩০ - ২ ঘন্টা
১০.৩০ - ১১.৩০ - ১ ঘন্টা (গ্রুপ)
১১.৩০ - ০২.০০ - ২.৫ ঘন্টা
৬. প্রতিটা সাব্জেক্টের জন্য ২ দিন সময় নিবা। আগের পোস্টে এ নিয়ে বিস্তারিত বলেছিলাম। কোন দিন কোন সাব্জেক্ট পড়বা এটা কীভাবে ফিক্সড করতে হবে এটাও বলেছিলাম আগের পোস্টে। যারা বিভিন্ন জায়গায় মডেল টেস্ট দিবা, তারা সেই রুটিন অনুযায়ী কোন কোন তারিখে কোন কোন সাব্জেক্ট পড়বা সেটা ভেবে নাও। প্রতিটি সাব্জেক্টের জন্য দিন বরাদ্দ হয়ে গেলে এবার তুমি আরেকটি কাজ করতে পারো। মনে করো, একটি সাব্জেক্টের ৭/৮ টা অধ্যায় আছে। প্রতিটা অধ্যায়গুলোকে ভালো করে দেখে মনে মনে একটা হিসাব করে রাখো যে কোন চ্যাপ্টার টা পড়তে কতক্ষণ লাগতে পারে। এটা করার জন্য তুমি দেখতে পার কতোটা পেজ আছে সে অধ্যায়ে। মনে করে একটা অধ্যায়ে ৩০ টা পেজ আছে। প্রতিটা পেজ রিডিং পড়তে তোমার ৪ মিনিট করে সময় লাগে। তাহলে মোট ১২০ মিনিটে বা ২ ঘন্টাতেই সেই অধ্যায়টা শেষ হয়ে যাবে। আবার ধরো, ৬ টা ম্যাথ আছে, প্রত্যেকটা করতে ১০ মিনিট করে সময় লাগে মানে মোট ৬০ মিনিট বা ১ ঘন্টা। এভাবে হিসাব করে নাও, কোন অধ্যায় পড়তে কতোক্ষণ সময় লাগবে। এই ধাপটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৭. এবার প্রতিটা সাব্জেক্টের বিভিন্ন অধ্যায়ের জন্য সময়গুলো
ভাগ করে নেওয়ার পরে কোন অধ্যায়টা কখন পড়বা সেটা প্ল্যান করে নাও। যেমন:
০৯.৩০ - ১১.৩০ - প্রথম অধ্যায়
১২.০০ - ০২.০০ - দ্বিতীয় অধ্যায়
০৫.০০ - ০৭.০০ - তৃতীয় অধ্যায়
০৭.৩০ - ০৮.৩০ - চতুর্থ অধ্যায়
০৮.৩০ - ০৯.৩০ - পঞ্চম অধ্যায়
১১.৩০ - ১২.৩০ - ষষ্ঠ অধ্যায়
১২.৩০ - ০১.৩০ - সপ্তম অধ্যায়
০১.৩০-০২.০০ - গ্রুপের বিভিন্ন টেস্টের
হোমওয়ার্ক।
এগুলা শুধু উদাহারণ দিচ্ছি বুঝানোর জন্য। কেউ আবার এগুলাকেই হুবুহু কপি মেরে follow করতে যেও না। তাহলে লাভ নাই। আবার ও বলছি, এই রুটিন টা শুধু বোঝানোর জন্য, এটাকে হুবুহু ফলো করা যাবেনা। এটা দেখে নিজের জন্য একটা বানাতে হবে। নিজের অবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে নিজে প্রস্তুত করবা। অনুগ্রহ করে কেউ আমাকে রিকোয়েস্ট করবা না রুটিন বানিয়ে দেওয়ার জন্য। এ যাবত কারোর টা বানাই দেইনি। এমনকি যারা আমার কাছে যারা পড়ে তাদের টাও না। কারণ নিজের রুটিন নিজে না বানালে সেই রুটিনের কোনো ভ্যালু নাই। নিজের রুটিন নিজে বানালে নিজের পড়ার স্টাইল সম্পর্কে নিজেই একটা স্বচ্ছ ধারণা পাবা যেটা তোমার জন্য এখন কাজে না দিলেও এডমিশনে অনেক কাজে দিবে। এজন্য সব সময়, নিজের রুটিন টা, নিজের হাতে বানানো উচিত।
আরেকটা বিষয় হলো, রুটিন বানানোটা যতটা সোজা, রুটিন টা মেইনটেন করাটা ঠিক ততোই বেশি কঠিন। যার কারণে একটা রুটিন বেশিদিন স্থায়ী হয় না। কয়েকদিন পর পর নতুন করে রুটিন বানাতে হয়, নতুন করে প্ল্যানিং করতে
হয় আবার। তাই এতে সময় অনেক বেশী নষ্ট হয় কেননা রুটিন বানাতেও বেশ সময় লাগে। তাই চেষ্টা করবা রুটিনটা কখনোই যেন ব্রেক না হয়। মানে তুমি যেন কোনমতেই তোমার প্ল্যানিং থেকে সরে না আসো।যেমন ধর আজ
সকালে তোমার চার নম্বর অধ্যায় পড়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়েই হয়তো তোমার বন্ধু/বান্ধবী ঘুরতে যাবে, তোমাকেও ডাকছে। না। যাওয়া যাবে না। যতোই কষ্ট হোক, থেকে যেতে হবে বাসায়। যেটা প্ল্যান ছিল সেটাই করতে হবে।
HSC Final 2020 রুটিন HSC Final 2020 রুটিন Reviewed by NINDOOK LIFE on January 26, 2020 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.