কাল রুপার বিয়ে

কাল রুপার বিয়ে

নিচের দিকে তাকিয়ে বসে আছি যেমন
টা পাথরের মূর্তি বসানো হয় সেইভাবে
রুপা চলে যাচ্ছে অভিমান করে বা রাগ করে না।।সে চলে যাচ্ছে আমাকে ছেড়ে
চিরদিনের জন্য আজ ওকে আটকানোর কোন
অধিকার আমার নেই রুপা সেই অধিকার
টা কেড়ে নিয়েছে।।এই তো কিছু মূহুর্তে
কয়েকটা কথায় সব শেষ হয়ে গেল শেষ
হয়ে গেল এত গুলা বছরের ভালবাসা, না ভালবাসা শেষ হয়না বরং যত দিন যায়
ততই বাড়ে কিন্তু সে বেড়ে যাওয়ার মূল্য
নেই কারণ ভালবাসার মানুষ না থাকলে
সেই ভালবাসা দিয়ে কি হবে???কাল
রুপার বিয়ে সেটাই জানাতে এসেছিল
আমাকে আগেও বলেছিল ওকে নাকি ছেলে পক্ষ দেখতে এসেছে আমাকে কিছু করতে
শেষ মূহুর্তে এটা বলেছিল চল পালিয়ে
বিয়ে করি কিন্তু আমার তো এত সাহস
নেই তাই এত গুলা বছরের ভালবাসার
ইতি দিতে হল।।।
. রাত ২টা ছাদে বসে আছি আজ ঘুম আসবেনা
এখন যদি ১০০টা ঘুমের ট্যাবলেটও খাই
তাহলেও ঘুম আসবেনা।।ভালবাসা জিনিস
টা অদ্ভুত এটা শুধু হৃদয় না ব্রেইন
টাকেও নিজের দখলে নিয়ে নেয়।।আমি
জানি রুপাও জেগে আছে হয়ত বালিশ ভিজাচ্ছে আর অতীত স্মৃতি গুলোকে মনে
করছে শেষ বারের মত ওর সাথে কথা বলা
প্রয়োজন এর পর হয়ত আর ইচ্ছা করলেও
বলতে পারব না।।।জীবনে কিছু জিনিস
হাড়িয়ে গেলে সেটা পরে হাজার ইচ্ছা
করলেও ফিরে পাওয়া যায় না।।।।প্রথম বার রিং হওয়ার সাথেই রুপা ফোন
রিসিভ করল অর্থাৎ আমার ফোনের
অপেক্ষায় ছিল।।
-হ্যালো রুপা...
-হুম বল....
-সরি ফোন দেয়ার জন্য জানি আমার অধিকার নেই কিন্তু তবুও শেষ বারের মত
দিলাম।।।কি করছ???
-কিছুনা।।
-মনে হচ্ছে তুমি কান্না করছ হয়ত
এতক্ষণে সম্পূর্ণ বালিশ ভিজে গেছে।।।
-আমি কান্না করব কেন??আর কার জন্যই কাঁদব???
-সেটা অবশ্য ঠিক কার জন্য কান্না
করবা তবুও তুমি কান্না করছ কারণ যে
মেয়েটার সাথে একদিন কথা না বললে
মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হওয়ার
অবস্থা হয় সেই মেয়েটাকে ছেড়ে চিরদিনের মত হাড়াচ্ছি আজ তো কাঁদারই
রাত।।
-তবুও আমি কাঁদবনা।।।
(এই কথা বলেই কান্না শুরু করে দিয়েছে
নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেনি কেন
যেন নিজেকে অনেক বড় অপরাধী মনে হচ্ছে।।আমার চোখ গুলা পাথরের মতই
শক্ত আমার চোখ দিয়ে পানি এত সহজে
আসেনা আমি শেষ কবে কাঁদছিলাম সেটা
ভূলে গেছি তবে আজ ওর কান্না শুনে আমার
চোখেও পানি চলে আসছে ব্যাপার টা
অদ্ভুত।।) -কি ব্যাপার কেঁদেই দিছ??যাই হউক
রাখি ভাল থেকো।।।
-আরেকটু কথা বলি???
-আর বলে কি হবে সব কিছু তো শেষ হয়ে
যাচ্ছে থাকুক কিছু কথা রহস্য হয়ে।।।
. ফোনের লাইন টা কেটে দিলাম হঠাৎ
করে বৃষ্টিও শুরু হয়েছে ঝুম বৃষ্টি আজ
আমি ইচ্ছা মত বৃষ্টিতে ভিজব কেউ
বকবেনা আর অভিমান ও করবেনা।।একটু
পরে আবার ফোন ধরবনা ধরবনা বলেও
ধরলাম... -আবার ফোন দিলা যে....(আমি)
-আমি জানি তুমি বৃষ্টিতে ভিজতেছ প্লিজ
ভিজিও না।।।(রুপা)
-আজ আর বাধা দিয়ে লাভ নেই তুমি যতই
না কর আমি আজ ভিজবই।।।
-আমার শেষ কথা টা রাখবানা.... -না তোমার শেষ কথা টা আজ রাখব
না।।।
.
আবার ফোন টা কেটে দিলাম অনেক রাত
পর্যন্ত ভিজে তারপর রুমে আসলাম।।।
সন্ধ্যার দিকে আমার ঠিক মত জ্ঞান আসছে অতিরিক্ত ভিজার ফলে যা হয়
জ্বরে অবস্থা কাহিল হয়ত নিউমোনিয়া
হয়ে গেছে।।ঠান্ডায় ছাগলের
নিউমোনিয়া হয় আর আজ মনে হয় আমার
হল এখনো অবশ্য সিওর না।।।হঠাৎ মনে
হল আজ তো রুপার বিয়ে হয়ত এতক্ষণে চলে গেছে শ্বশুর বাড়ি আর নিজের
বাড়িতে রেখে গেছে আমার সব
স্মৃতি,ভালবাসা।।।
.
হঠাৎ দেখি আমার পাশে রুপা বসে আছি
অবাক হওয়ার ব্যাপার মেয়েটা শ্বশুর বাড়ি থাকার কথা কিন্তু এখানে কি????
আমি কি এখনো ঘুমে নাকি ঘুমের ঘুরে
রয়েছি।।।
-রুপা তুমি এখানে???
-হুম এখানেই??
-তোমার না আজ বিয়ে।।। -হ্যাঁ বিয়েই তো ছিল।।
-ছিল মানে।।
-ছিল মানে ছিল হয়নি।।
-কেন হয়নি???
-লাক টা খুব খারাপ বিয়ের দিন সকালে
যার সাথে বিয়ে হবে সে অন্য মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে।।হিহিহিহি।।তা
আপনার অবস্থা দেখি একদম কাহিল এই
অবস্থাতে আমাকে বিয়ে করতে
পারবেন।।
(রুপা হাসছে সারা ঘর কাঁপিয়ে হাসছে
একটা মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে গেছে তার কাছে হয়ত এটাই সব থেকে খুশির
সংবাদ)
-মানে??
-মানে আল্লাহ একবার চান্স দিয়েছেন
এখন যদি সেটা কাজে না লাগাও তাহলে
সারা লাইফ এইরকম একা একা বৃষ্টিতে ভিজতে হবে।।।
.
.
[হ্যাঁ শেষ চান্স টা কাজে লাগিয়েছি
রুপাকে আপন করে নিয়েছি সারাজীবনের
জন্য কি ভাবছেন পালিয়ে বিয়ে করেছি আরে নাহ পারিবারিক ভাবেই করেছি
দুজনের যা অবস্থা বিয়ে না দিয়ে উপায়
আছে হেহেহে...